চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ শেষ হতে না হতেই চরম বিতর্কে জড়াল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি)। আইপিএল জয়ের পর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলিত হয়ে ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটায় দলটির ওপর সরাসরি দায় চাপিয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (ক্যাট)। ট্রাইবুনালের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশাল জনসমাগমের জন্য পুলিশ বা প্রশাসনের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি না নিয়েই এই উৎসব আয়োজন করেছিল আরসিবি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, `প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৩ থেকে ৫ লাখ মানুষের জমায়েতের জন্য আরসিবিই দায়ী। তারা পুলিশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি এবং হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই উৎসবের ঘোষণা দেয়। যার ফলে এমন বিপজ্জনক ভিড় তৈরি হয়।‘
ট্রাইবুনাল আরও কড়া ভাষায় আরসিবির আচরণকে "উপদ্রব" হিসেবে অভিহিত করে জানিয়েছে, `এই আয়োজনের ঘোষণা ছিল সম্পূর্ণ আচমকা এবং অনুমতিহীন। মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত হওয়া পুলিশের পক্ষে অসম্ভব ছিল।‘
পুলিশ সদস্যদের পক্ষে কথা বলে ট্রাইবুনাল মন্তব্য করে, `পুলিশও মানুষ, তারা কোনো অলৌকিক শক্তির অধিকারী নয়। আলাদিনের চেরাগ ঘষে মুহূর্তে নিরাপত্তার আয়োজন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আরসিবি প্রয়োজনীয় সময় ও সহযোগিতা দেয়নি।‘
আইপিএলের ১৮তম আসরে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় আরসিবি। ৩ জুন শিরোপা জয়ের পর দলের অন্যতম তারকা বিরাট কোহলি ৪ জুন বেঙ্গালুরুতে বিজয় উৎসবের ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে বিধান সৌধ ও চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে, বিপুল জনসমাগম ঘটে। হঠাৎ ভিড়ের চাপে চিন্নাস্বামীর বাইরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে এবং পদদলিত হয়ে ১১ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন।
দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনার পর থেকে আরসিবি, কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজ্য সরকার—তিন পক্ষ একে অপরের ওপর দোষ চাপাতে থাকে। এরই মধ্যে আরসিবির কয়েকজন শীর্ষ কর্তা গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান। সেই সঙ্গে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে কিছু পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই বরখাস্তের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে আবেদন করেছিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। শুনানির পর ট্রাইবুনাল প্রাথমিকভাবে দায় চাপিয়েছে আরসিবির ওপরেই।
সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ